1
/
of
1
Biproteep Prokashona
A Fly on the Wheel by Lt. Colonel Thomas Lewin
A Fly on the Wheel by Lt. Colonel Thomas Lewin
Regular price
Tk 1,200.00 BDT
Regular price
Tk 1,500.00 BDT
Sale price
Tk 1,200.00 BDT
Quantity
Couldn't load pickup availability
পৃষ্ঠা সংখ্যা : ৩৮৪
ভূমিকা : জুলিয়ান ফ্রান্সিস
নোয়াখালী, চট্টগ্রাম, পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলের ইতিহাস সম্পর্কে খোঁজখবর রাখেন, এমন বহুজনের কাছেই টি. এইচ. লুইন একটি পরিচিত নাম। ১৮৬০ সালে পার্বত্য চট্টগ্রাম জেলা সৃষ্টি করা হয়। লুইন এ জেলার প্রথম জেলা প্রশাসক। পার্বত্য চট্টগ্রামের কিংবদন্তি লেফট্যানেন্ট কর্নেল টি এইচ লুইনকে সেখানকার জনগণ ডাকতেন 'থাংলিয়ানা' নামে।
লুইনের বরাতে আমরা জানতে পারি, তাঁর আগে এ অঞ্চলের দায়িত্বের জন্য নিয়োজিত (যাঁকে তিনি শুধু ‘ক্যাপ্টেন এম’ নামে অভিহিত করেছেন) ছিলেন ‘পাগলা সাহেব’। যে নামডাকের সাথে জড়িয়ে ছিল লুষাইদের বীড়ূদ্ধে তাঁর দুঃসাহসিক কীর্তিকলাপসহ বিভিন্ন চমকপ্রদ কর্মকান্ডের কাহিনী। তবে সেই পাগলা সাহেবকে ছাড়িয়ে আরো অনেক বড় জীবন্ত কিংবদন্তীতে পরিণত হয়েছিলেন লুইন নিজেই।
১৮ বছর বয়সে ভারতে আসার পর তিনি সি পাহি বি**দ্রোহ দমনে নিয়োজিত ছিলেন। পরে তিনি হাজারীবাগ ও নোয়াখালীতে উর্ধ্বতন পদে যোগ দেন। আমরা তার বই থেকে নোয়াখালীর তৎকালীন ফরাসি জমিদারি, হাতির বাহিনী নিয়েও জানতে পারি।
এরপর চট্টগ্রাম শহরে দায়িত্ব পালনের পর মাত্র সাতাশ বছর বয়সে পার্বত্য চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক হিসাবে নিয়োগ পান। কয়েক বছরের মধ্যে বেশ দাপট ও চতুরতার সাথে স্থানীয়দের অধিপতি হিসাবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার কাজে তৎপর হয়ে উঠেছিলেন লুইন। তখনো সরাসরি শাসনের আওতায় আসেনি, এমন কিছু জনগোষ্ঠীকে বশ করার কাজেও তিনি ভূমিকা পালন করেন। স্থানীয়দের ভাষা ও রীতিনীতি শিখে তাদের মন জয় করার চেষ্টাসহ অন্যান্য কৌশলও তিনি অবলম্বন করেছিলেন। এগুলির মধ্যে সবচেয়ে ব্যতিক্রমধর্মী ছিল জাদুর ব্যবহার, অর্থাৎ গুপ্ত কলাকৌশল-নির্ভর ভেল্কিবাজি, যেসবের কিছু চমকপ্রদ বিবরণ তিনি নিজেই লিখে গেছেন। কিছু ক্ষেত্রে সম্ভবত ভাগ্যও তাঁর সহায় ছিল, যার ফলে একাধিকবার রক্ষা পেয়েছিলেন সম্ভাব্য মৃত্যুসহ বিভিন্ন বিপদের হাত থেকে। সব মিলিয়ে কালক্রমে তিনি পরিণত হন একজন জীবন্ত কিংবদন্তীতে, এবং চাকমা ও লুসাইদের কাছে তিনি পরিচিত হয়ে ওঠেন থাংলিয়ানা হিসাবে। বর্তমান বাংলাদেশের বোমাং, মং ও চাকমা রা*জপরি*বার আজও তাঁকে এ নামে মনে রেখেছে।
এ অঞ্চলের প্রেক্ষাপটে ক্যাপ্টেন লুইন ছিলেন – এখনো অনেকটা আছেন – একজন কিংবদন্তীর নায়ক, মহারথী। এ প্রসঙ্গে প্রশ্ন উঠতে পারে, টমাস হার্বার্ট লুইনের বদলে অন্য কেউ যদি চন্দ্রঘোনায় গিয়ে উপস্থিত হতেন, সেখানকার ইতিহাস কি খুব একটা ভিন্ন হত? লুইনের অনুপস্থিতিতে হয়তো ‘থাংলিয়ানা’ নামের কারো কাহিনী চালু থাকতো না, কিন্তু তাতে কি তাদের অর্থনৈতিক-সাংস্কৃতিক ইতিহাস অন্য কোনোদিকে মোড় নিত?
লুইনের বদলে অন্য কেউ ডিসি হলে কি বোমাং বা চাকমা রা*জপরি*বারের ইতিহাস ভিন্ন হতো? ইতিহাসে একজন ব্যক্তির ভূমিকা কতটুকু? মোটা দাগে আমরা বলতে পারি, ১৮৬৬ সালে লুইনের বদলে অন্য কেউ পার্বত্য সদর চন্দ্রঘোনায় হাজির হলেও সে অঞ্চলের ইতিহাস হয়ত খুব একটা ভিন্ন হতো না। এক অর্থে লুইন নিজেও এ ব্যাপারে সচেতন ছিলেন, যাঁর ইঙ্গিত মেলে তিনি যেভাবে নিজের স্মৃতিচারণমূলক গ্রন্থের শিরোনাম ঠিক করেছেন তাতে। ইংরেজি A Fly On the Wheel কথাটি একটি বাগ্ধারা, যেটির মূলে রয়েছে ঈশপের একটি গল্প। সেটি সংক্ষেপে এরকম: রথের প্রতিযোগিতা হচ্ছে। অনেক রথের চাকা ও ততোধিক ঘোড়ার খুরের ধাক্কায় চারিদিকে শুধু ধূলা উড়ছে। কিন্তু কোনো এক রথের চাকায় বসা একটি মাছি তার কারণে এসব হয়েছে ধরে নিয়ে মনে মনে নিজেকে বাহবা দিচ্ছে, ‘আমি কেমন একটা ধূলিঝড় তৈরি করলাম!’
লুইনের বইতে যেসব প্রসঙ্গ খুব একটা আলোচিত হয়নি, সেগুলি বিবেচনায় নিলে তাঁর অনেক বক্তব্য ও পদক্ষেপ ভিন্ন আলোয় আমাদের সামনে হাজির হয়। যেমন, যে অঞ্চলে তিনি তাঁর নামডাক কুড়িয়েছিলেন, সেটা ছিল একটি গুরুত্বপূর্ণ সীমান্ত অঞ্চল, যার পাশেই প্রতিবেশী শ্যামদেশ (বরমা) যা ছিল একসময় দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার সবচাইতে শক্তিশালীদের একটি। তাদের সাথে বিটিষদের তিন দফা য়ু*দ্ধ হয়েছিল, প্রথবার ১৮২৪-২৬ সালে, যার পর মণিপুর, আসাম ও আরাকান (যেগুলি আগে ছিল স্বাধীন রাজ্য) দখলে চলে আসে। এরপর দ্বিতীয় দফা অনুষ্ঠিত হয় ১৮৫২-৫৩ সালে, লুইনের ঊপ মহাদেশে আগমনের মাত্র চার বছর আগে, এ দফায় বড় অংশ দখলে আসে। বাকি যেটুকু ছিল, সেটিও তারা দখল করে নেয় ১৮৮৫ সালের তৃতীয় য়ু*দ্ধে, A Fly on the Wheel প্রথম প্রকাশের বছর।
এসব বৃহত্তর ঘটনাবলীর আলোকে দেখলে বিভিন্ন পার্বত্য জা//তির প্রতি বিশেষ দৃষ্টিভঙ্গী পোষণ করা, তাদের অনেকের প্রতি বন্ধুত্বের হাত বাড়িয়ে দেওয়া, চাকমা রা//নী কালিন্দী ও বোমাং প্রধানকে সন্দেহের দৃষ্টিতে দেখা ইত্যাদি বিষয়কে লুইনের একান্ত ব্যক্তিগত চিন্তাধারার ফসল হিসাবে আর ব্যাখ্যা করা যায় না। এসব বিষয় তিনি সরাসরি তাঁর বইতে উল্লেখ না করলেও, নিজের বলা গল্পকে যে তিনি রথের চাকায় বসা একজন মাছির চোখে দেখা ঘটনাবলী হিসাবে তুলে ধরতে চেয়েছিলেন, তা তাৎপর্যপূর্ণ। তাঁর মনোজগতের ‘আদিম পাহাড়ি’দেরকে তিনি ‘নিজের লোক’ হিসাবে চিন্তা করতেন, নিজেকে ভাবতে শুরু করেছিলেন তাদের চিফ হিসাবে, কিন্তু শেষ বিচারে তিনি যে একজন বিদেশি ছিলেন, তা তিনি ভোলেননি। তাই বইটিও তিনি শেষ করেছিলেন নিজেদেরই জয়গান গেয়ে। কে জানে, A Fly in the Wheel বইটি যখন প্রকাশিত হয়, তখন লুইন হয়তবা স্বপ্ন দেখতেন আবার ফিরে যাওয়ার, ছোট লাটের মত কোনো লোভনীয় পদে, তখনো সারা পৃথিবী জুড়ে ছড়ানো ‘সভ্যতার আলো ছড়ানো’ পতাকা উড়িয়ে।
আজ থেকে ঠিক দেড়শত বছর আগে টমাস লুইন চট্টগ্রাম ছেড়ে চলে যান। তার এ বিদায়কে স্মরণ করেই আদিত্য প্রকাশের নিবেদন সচিত্র "A Fly on the Wheel" . বইটির ভূমিকা লিখেছেন মুক্তিযুদ্ধে দেশ ছেড়ে যাওয়াদের পুনর্বাসন ও বাংলাদেশে চা+কমা পুনর্বাসনে বলিষ্ঠ ভূমিকা প্রদানকারী কলামিস্ট ও উন্নয়নকর্মী জুলিয়ান ফ্রান্সিস।
উল্লেখ যে, সেন্সরশিপ এড়াতে এ লেখাটির বিভিন্ন শব্দ ভুল বানানে লেখা হয়েছে।
উল্লেখ্য যে, বইটির সূচীপত্র কমেন্ট সেকশনে দেওয়া হলো।
উল্লেখ্য যে, বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় পরিচালিত গ্রন্থাগার ও আর্কাইভসমূহের জন্য এ বইটি ৩০% ছাড়ে পাওয়া যাবে (গণগ্রন্থাগার বা জাতীয় গ্রন্থ কেন্দ্রের নিবন্ধন সনদসহ ক্রয়াদেশ পাঠাতে হবে)
Share
