পাক রাজেশ্বর ও ব্যঞ্জন রত্নাকর প্রসঙ্গকথা ও পরিভাষা — শ্রী পান্থ

বাংলা ভাষায় রন্ধন শিক্ষার প্রাচীনতম বইগুলির মধ্যে অন্যতম ‘পাক রাজেশ্বর’ ও ‘ব্যঞ্জন রত্নাকর’। বর্ধমানের রাজা মহতাব চাঁদ, ব্রাহ্মণ পণ্ডিত বিশ্বেশ্বর তর্কালঙ্কার ভট্টাচার্যের মাধ্যমে পাক রাজেশ্বর রচনা করান, আর ১৮৫৮ সালে প্রকাশিত হয় গৌরীশঙ্কর তর্কবাগীশের ব্যঞ্জন রত্নাকর।

দুটি বইতেই বারবার উঠে এসেছে মাংস রান্নার প্রসঙ্গ—মেষ, কচ্ছপ, হরিণ, খরগোশসহ নানা প্রাণীর মাংসের বিবরণ এবং সেসব রান্নার বিচিত্র প্রণালী। উদাহরণস্বরূপ, তিলের তেল সহযোগে ছাগলের মাথা রান্নার কৌশলও বিস্তারিতভাবে বর্ণিত হয়েছে। এসব রন্ধনপদ্ধতি উনিশ শতকের বাংলার সম্ভ্রান্ত সমাজের ভোজন রুচি ও খাদ্যসংস্কৃতির এক জীবন্ত দলিল হয়ে আছে।

যারা দেড়শো বছর আগে বাংলার উঁচু ঘরানার রান্নার ধরণ জানতে চান বা সেই স্বাদ নিজের রান্নাঘরে ফিরিয়ে আনতে চান, তাদের জন্য পাক রাজেশ্বর ও ব্যঞ্জন রত্নাকর শুধু রন্ধন নির্দেশিকা নয়, বরং অতীতের স্বাদ-গন্ধে ভরা এক অনন্য ভোজসভায় নিমন্ত্রণপত্র।